হিন্দু পরিবারের আতিথেয়তায় বর্ধমানে ঈদ পালন করলেন কাশ্মীরের দুই মুসলিম যুবক

26th May 2020 বর্ধমান
হিন্দু পরিবারের আতিথেয়তায় বর্ধমানে ঈদ পালন করলেন কাশ্মীরের দুই মুসলিম যুবক


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :  হিন্দুর বাড়িতে থেকে রোজা পালনের পর সেখানেই পবিত্র ইদের নামাজ সারলের দুই কাশ্মীরি মুসলমান যুবক । এমনই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো শহর বর্ধমানে । হিন্দু পরিবারে আতিথেওতায় ইদ পালন করতে পেরে  আপ্লুত কাশ্মীরি যুবকরা ।   য়লক ডাউন চলায় নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারেন নি দুই কাশ্মীরি মুসলমান যুবক। তাঁদের আশ্রয় দিয়েছেন বর্ধমানের  ভাতছালা  বাসিন্দা পল্লব দাসের পরিবার।রোজা শুরুর প্রথম দিন থেকেই তাঁরা পল্লব বাবুর বাড়িতে থেকেই রোজা  পালন করেছেন। সেখানেই নামাজ পাঠ শেষে রোজা খুলে ইফতারও  সারেছেন । যুবকদের রোজাপালন ও ইফতার সারার ব্যাপারে সর্বত ভাবে সহযোগীতা করে গেছেন পল্লব দাস ও তার মা রাইমণি দাস। এদিন  কাশ্মীরি মুসলমান যুবকরা ইদও মানালেন হিন্দু দাস বাড়িতে থেকেই । ইদের নামাজ পাঠ থেকে শুরু করে সবকিছুই ঠিকঠাক সারতে পেরে খুশি কাশ্মীরি মুসলমান  যুবকরা ।এদিন নামাজ পাঠ সেরে কাশ্মীরি যুবক ফৈয়াজ আহমেদ ও মনজুর আহমেদ  বলেন, সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার মহত্মবোধ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদেরই রয়েছে  । 

 পল্লব দাস ও তার মা রাইমণি দাস এদিন জানালেন , প্রতিবছর শীতের শুরুতে ফৈয়াজ ও তার ভাই মনজুর  কাশ্মীর থেকে বর্ধমানে  চলে আসে ।রাইমণিদেবী বলেন, যুবকরা এবছরও তাঁদের বাড়ি ভাড়া নিয়ে নভেম্বর মাসথেকে থাকতে শুরু করে। তাই দায় বিপদে তিনি তাঁদের পাশে থাকেন। ফৈয়াজ ও মনজুর এপ্রিল মাস পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে  শীতবস্ত্র বিক্রি করে। এবছরও  নির্দিষ্ট সময়ে ওরা দুই ভাই বর্ধমানে আসে । কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোখার জন্য লক ডাউন চালু  হতেই ওরা বিপাকে পড়েযায় ।কাশ্মীরের বাড়িতে আর ফিরতে না পেরে ওরা তাঁদের  বর্ধমানের বাড়িতেই আটকে পড়ে ।তারই মধ্যে রোজা শুরুর দিনও নির্দিষ্ট হয়েযায় । রাইমণিদেবী জানালেন ,রোজা পালনে ফৈয়াজ ও মনজুরকে যাতে কোন অসুবিধায় পড়তে না হয় তার জন্য তিনি ও তাঁর ছেলে সর্বত ভাবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ছিলেন । দুই কাশ্মীরি মুসলান যুবক  মানসিক তৃপ্তি নিয়ে যাতে ইদ  পালন করতে পারেন  তার আয়োজনে তারা কোন ত্রুটি রাখতে চান নি । ফৈয়াজ ও মনজুর এদিন বলেন , ‘বাঙালির এই মহানুভবতা চিরদিন মনে রাখবো ।পল্লব বাবু ও তাঁর মায়ের আতিথেওতার কথা কাশ্মীরে  ফিরেগিয়ে সবাইকে বলবো ।’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।